ভালবাসা আর সময়ের বাঁধন
(পর্ব ৫: আবার দেখা... কিন্তু!)
১
রূপা দেশে ফিরে এসেছে, কিন্তু তার জীবন আর আগের মতো নেই। পরিবারের সবাই ভীষণ রাগান্বিত। বাবা-মা তাকে প্রায় বন্দির মতো রেখে দিয়েছে—কারো সঙ্গে দেখা করতে দেয় না, বাইরে যেতে দেয় না।
রূপা জানত, এই পরিস্থিতি সহজে বদলাবে না। কিন্তু একটা প্রশ্ন বারবার ওর মনে আসছিল—রাফি কি জানে যে সে দেশে ফিরে এসেছে?
সে কি জানার চেষ্টা করছে?
রূপা অনেকবার ফোন করতে চেয়েছিল, কিন্তু ভয় করত। যদি রাফি ভুল বুঝে? যদি ভাবে, সে নিজেই বিয়ে করতে চেয়েছিল?
অন্যদিকে, রাফির জীবনও বদলে গেছে। সে রূপার বিয়ের খবর পাওয়ার পর থেকেই নিজেকে বদলে ফেলেছে—নিজের চারপাশে একটা অদৃশ্য দেয়াল তুলে নিয়েছে।
বন্ধুরা বলত,
— "তুই কি কখনো রূপাকে ভুলতে পারবি?"
রাফি শুধু ম্লান হেসে বলত,
— "ভুলে যাওয়ার মতো জিনিস যদি থাকত, তাহলে হয়তো পারতাম..."
২
একদিন হঠাৎ করেই রূপার বান্ধবী মিথিলা রাফির সামনে এসে দাঁড়াল।
— "রূপা দেশে ফিরেছে।"
রাফি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারল না।
— "কী বললে?"
— "হ্যাঁ। বিয়ে হয়নি। কিন্তু ও এখন বন্দির মতো আছে। কিছু করো, প্লিজ!"
রাফি কিছুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর বলল,
— "আমার কিছু করার নেই। ওর পরিবার ওকে আটকে রেখেছে। আমি যদি কিছু করতে যাই, তাহলে ওর বিপদ আরও বাড়বে।"
কিন্তু মিথিলা চুপ থাকল না।
— "ওকে অন্তত একবার দেখবে না?"
এই কথাটা রাফিকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিল।
৩
পরদিন সন্ধ্যায় রাফি রূপাদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
সে জানত, এটা ঠিক নয়। কিন্তু মনকে আর বুঝ দিতে পারল না।
কয়েক মিনিট পর, হঠাৎ জানালার পর্দা সরল।
রূপা!
দীর্ঘ পাঁচ মাস পর আবার দেখা।
দুই চোখে বিস্ময়, আনন্দ, কষ্ট, না বলা হাজারো অনুভূতি।
রূপা ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে রইল। রাফি ইশারায় কিছু বলতে চাইল, কিন্তু ঠিক তখনই পেছন থেকে রূপার মায়ের কণ্ঠ ভেসে এল—
— "রূপা, জানালার কাছে কী করছ?"
রূপা দ্রুত পর্দা টেনে দিল।
রাফি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকল।
শুধু মনে মনে বলল, "আমি কি সত্যিই তোমাকে হারিয়ে ফেললাম?"
চলবে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন