সোনাবিদ কাব্য – কবিতা, ভালোবাসা আর জীবনের গভীর অনুভূতির এক অনন্য ভুবন। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া প্রেম, বিরহ, সুখ-দুঃখের কবিতাগুলো পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ব্লগ।

Responsive Advertisement

বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

ভালবাসা আর সময়ের বাঁধন পর্ব ৩

  ভালবাসা আর সময়ের বাঁধন

(পর্ব ৩: না বলা কথারা...)

স্কুলজীবনের দিনগুলো যেন স্বপ্নের মতো কাটছিল রাফি আর রূপার। কিন্তু জীবনের গল্প তো আর একই ছন্দে চলতে থাকে না। সময়ের সঙ্গে বদলে যায় সম্পর্ক, অনুভূতি, বাস্তবতা।

একদিন বিকেলে স্কুলের মাঠে বসে রাফি আর রূপা গল্প করছিল। হঠাৎ রূপা বলল,
— "রাফি, একটা কথা বলব?"

রাফি তাকিয়ে রইল ওর দিকে। রূপার চোখে কেমন যেন অস্থিরতা।
— "বলো।"

রূপা গভীর শ্বাস নিল, যেন নিজেকে প্রস্তুত করছে। তারপর বলল,
— "আমার বাবা-মা চায়, আমি এই বছর স্কুল শেষ করেই দেশের বাইরে চলে যাই।"

রাফির বুকের ভেতর ধাক্কা লাগল।
— "বাইরে? কোথায়?"

— "লন্ডন। বাবা চান, আমি ওখানে গিয়ে পড়াশোনা করি, নতুন জীবন শুরু করি।"

রাফি কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। এই মুহূর্তটা সে কখনো কল্পনাও করেনি।

— "তাহলে তুমি চলে যাচ্ছ?"

রূপা চুপ করে থাকল, তারপর আস্তে করে বলল,
— "তুমি কি চাইবে আমি যাই?"

রাফি মাথা নিচু করে ফেলল। মনের মধ্যে যেন হাজারো ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সে কি বলবে? সে কি চাইবে রূপা থেকে যাক? কিন্তু বাস্তবতা তো অন্য কথা বলে।

— "তোমার স্বপ্ন তো বড়, তাই না?"

— "হুম... কিন্তু এই শহর, এই জায়গা... আর তুমি..."

রাফি কিছু বলল না। দুজনের মাঝে নীরবতা নেমে এল। সন্ধ্যার বাতাস বইতে লাগল, তাদের চারপাশের গাছের পাতা দোল খেতে লাগল, কিন্তু তারা শুধু একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে রইল—হাজারো না বলা কথা নিয়ে।

পরবর্তী দিনগুলো যেন কেমন অদ্ভুত হয়ে গেল। রূপা আগের মতো হাসত, কথা বলত, কিন্তু রাফি বুঝত, তার চোখের গভীরে লুকিয়ে আছে এক ধরনের কষ্ট।

স্কুলের শেষ দিন এসে গেল। ক্লাসরুম ফাঁকা, সবাই ব্যস্ত বিদায়ের মুহূর্ত কাটাতে। রাফি করিডোরের এক কোণে দাঁড়িয়ে ছিল, আর রূপা তার সামনে।

— "রাফি, যদি কখনো আমাদের দেখা না হয়... তবে কি তুমি আমাকে ভুলে যাবে?"

রাফি একটু হাসল, সেই হাসির মধ্যে কষ্ট লুকানো ছিল।

— "ভুলে যাওয়ার মতো কি কিছু হয়েছে?"

রূপার চোখ চকচক করছিল। সে তার ব্যাগ থেকে একটা চিরকুট বের করল, রাফির হাতে দিল।

— "এটা খুলবে না এখন। যখন মনে হবে তুমি আমাকে মিস করছ, তখন পড়বে।"

রাফি চিরকুটটা হাতে নিল, কিছু বলল না।

রূপা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল স্কুল গেটের দিকে। হঠাৎ একবার পেছনে ফিরে তাকাল, তারপর একদম চলে গেল...

রাফি অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে রইল। চারপাশ ফাঁকা হয়ে গেলেও সে নড়ল না। অবশেষে ধীরে ধীরে চিরকুটটা খুলল।

লেখা ছিল—

"তুমি বলেছিলে, যখন কাউকে না দেখলে মনে হয় কিছু একটা নেই, সেটাই ভালোবাসা।
আমি অনুভব করছি... কিছু একটা নেই...
"

(চলবে...)

কোন মন্তব্য নেই:

Subscribe Us

Main Slider

SoraBook

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Vestibulum rhoncus vehicula tortor, vel cursus elit. Donec nec nisl felis. Pellentesque ultrices sem sit amet eros interdum, id elementum nisi ermentum.Vestibulum rhoncus vehicula tortor, vel cursus elit. Donec nec nisl felis. Pellentesque ultrices sem sit amet eros interdum, id elementum nisi fermentum.




Comments

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *